বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের জন্য পিতামাতা/অভিভাবকদের করনীয়



অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ এস আই মল্লিক
অধ্যাপক, শিশু ও কিশোর মনোরোগ বিদ্যা
মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা কি:
ড় বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা হল কোন শিশু বা ব্যক্তির স্বল্পবুদ্ধিহেতু বয়সানুপাতিক আচরনের অক্ষমতা। শিশুর বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা জনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়। এটি একটি বিকাশজনিত বুদ্ধি সমস্যা। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের বয়স অনুযায়ী বুদ্ধি স্বাভাবিকের চেয়ে তাৎপর্য্যপূর্নভাবে কম থাকে। ফলে এদের বয়সানুপাতিক বৃত্তিমূলক কাজ, খেলাধুলা, লেখাপড়া, সামাজিক আচার-আচরন, মেলামেশা, নিজের যত্ন নেওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে কম দক্ষতা ও সীমাবদ্ধতা দেখা যায়। এই সমস্যা একজন লোকের ১৮ বৎসর বয়সের আগেই দেখা দেয়।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার বৈশিষ্ট্যঃ
বুদ্ধিগত বা আচরনগত বিষয়ে সীমাবদ্ধতা।
কোন কোন বিষয়ে শিখতে না পারা।
লেখপড়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা সত্ত্বেও সমবয়সী স্বাভাবিক শিশুদের মত না পারা।
অনেক ক্ষেত্রে নিজের স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় কাজগুলি করতে না পারা।
কথোপকথনের ক্ষেত্রে সমবয়সীদের তুলনায় কম দক্ষতা।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজের ভাল মন্দ বুঝতে না পারা।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার সাথে অন্যান্য বুদ্ধি রোগ হবার সম্ভাবনা শতকরা ৩০ থেকে ৫০ ভাগ।
এটি নিরাময়যোগ্য নয়, তবে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এসকল শিশুদের বিদ্যমান বুদ্ধির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার প্রকার ভেদ
মৃদু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী
যাদের বুদ্ধি ও আচরনের যোগ্যতা সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১২ বছরের স্বাভাবিক শিশুর মত।
সাধারনত এদের কোন শারীরিক বৈকল্য থাকে না।
এদের ভাল মন্দ বিচার ক্ষমতা কম।
এরা সামান্য পড়ালেখা এবং ছোটখাটো হিসাব নিকাশ করতে পারে।
এরা সহজ কাজ ও সহজ পেশা গ্রহন করতে পারে।
শিক্ষার মাধ্যমে এদের উন্নতি করা সম্ভব।
মধ্যম বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ঃ
যাদের বুদ্ধি ও আচরনগত যোগ্যতা সর্বোচ্চ ৩-৭ বছরের শিশুদের সমতুল্য।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার সাথে শারীরিক বৈকল্যও দেখা যায়।
বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এদেরকে সহজ পেশা গ্রহনের উপযোগী করা সম্ভব।
গুরুতর বুদ্ধি প্রতিবন্ধীঃ
যাদের বুদ্ধি ও আচরনগত যোগ্যতা সর্বোচ্চ ৩ বছরের শিশুর সমতুল্য।
এদের আচরন ও বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ যথেষ্ট কম
এরা মূলত অন্যের উপর নির্ভরশীল। তবে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষনের মাধ্যমে পরনির্ভরশীলতা আংশিক কমানো যেতে পারে।
চরম বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ঃ
এদের বুদ্ধি ও আচরনগত যোগ্যতা নেই বললেই চলে।
প্রায় ক্ষেত্রে এদের গুরুতর শারীরিক বিকলঙ্গতা দেখা যায়।
সবক্ষেত্রে অন্যের উপর নির্ভরশীল।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার সম্ভাব্য কারনসমুহ ঃ
অনেক কারনেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-
ক্রোমোজোমের বিকৃতি- শিশুর ভ্রুন অবস্থায় ক্রোমজোমের ক্রটি দেখা দিলে পরোক্ষভাবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা দেখা দিতে পারে যেমন ডাউন্স সিন্ড্রোম।
সংক্রমন ও বিষাক্ততা- গর্ভাবস্থায় মায়ের সংক্রমন যেমন মায়ের রুবেলা (জার্মান হাম) হওয়া, সিফিলিস হওয়া, জন্মের পর শিশুর সংক্রমন, গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ঔষধ সেবন অথবা বিষাক্ত দ্রব্য দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, যেমন দস্তা, আর্সেনিক, কার্বন মনোক্সসাইড গ্যস দ্বারা।
মস্তিস্কে আঘাত- গর্ভকালীন, জন্মের সময় বা শৈশবকালীন সময়ে মস্তিস্কে আঘাত, মস্তিস্কে অক্সিজেনের অভাব হওয়া, মস্তিস্কে রক্তপাত হওয়া।
গর্ভধারনজনিত সমস্যা, অপুষ্টি, কম ওজনের সন্তান প্রসব
শৈশবকালীন মস্তিস্কের রোগ-যেমন-এনকেফালাইটিস, মেনিনজাইটিস, খিচুনী রোগ, টিউমার ইতাাদি।
অপুষ্টি- গর্ভাবস্থায় মায়ের এবং জন্মের পর শিশুর অপুষ্টি, আয়োডিন, ভিটামিন, হরমোন ইত্যাদির অভাব।
শিশু প্রতিপালন ও পরিবেশগত সমস্যা- শিশুর যথাযথ পরিচর্যার অভাব, যথেষ্ট সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক উদ্দীপনার অভাব।
গর্ভাবস্থায় মস্তিস্ক গঠনে সমস্যা – মস্তিস্কের কোন অংশের অনুপস্থিতি।
প্রতিরোধের উপায় সমূহ
গর্ভকালীন সময়ে পুষ্টি নিশ্চিতকরন।
গর্ভাবস্থায় মা কোন রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করন।
গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ গ্রহন না করা।
গর্ভাবস্থায় মায়ের উপর বুদ্ধি নির্যাতন না করা
১৮ বৎসরের কম এবং ৩৫ বৎসরের অধিক বয়সে সন্তান ধারন না করা।
প্রসব বেদনা উঠলে দ্রুত ডাক্তারের ব্যবস্থা করা।
শিশুর যথাযথ পরিচর্যা করা, পুষ্টি নিশ্চিত করা, রোগাক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
শিশুকে বুদ্ধি পীড়ন না করা।
শিশুকে প্রয়োজনীয় টীকা দেয়া।
নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিবাহে নিরুৎসাহিত করা।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা চিহ্নিতকরনের উপায় ঃ
আদর্শ বুদ্ধি অভিক্ষা বা আই, কিউ পরিমাপের মাধ্যমে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা চিহ্নিত করা যায়-বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের আই, কিউ ৭০ এর নীচে থাকে।
তবে শিশুর আচারনগত ও বুদ্ধিবৃত্তিগত সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা চিহ্নিত করা যায়। যেমন-
শিশুর বসা, দাঁড়ানো, হাঁটা, কথাবলা সঠিক সময়ে না হলে।
কোন বিষয় বা ঘটনা বয়সানুপাতে বুঝতে না পারলে।
সমবয়সীদের চেয়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলে।
শিশুকে বয়সানুপাতে স্বাভাবিক বুদ্ধি সম্পন্ন মনে না হলে।
বয়সানুযায়ী আচরনের ঘাটতি থাকলে।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের সমস্যা ঃ
বুদ্ধি স্বল্পতার কারনে অন্য দশজন শিশুর মত এরা স্বনির্ভর হতে পারে না।
এরা সারাজীবন অন্যের উপর আংশিক বা পূর্ন নির্ভরশীল থাকে।
স্বল্পমাত্রায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী অনেক সময় অন্যের দ্বারা প্রলুদ্ধ হয়ে অপরাধমূলক অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়।
সাধারনত এদের মাঝে অতিরিক্ত চঞ্চলতা, অটিজম, মৃগীরোগ, আবেগজনিত রোগ সহ অন্যান্য বুদ্ধি রোগের প্রোকোপ বেশী মাত্রায় দেখা যায় (শতকরা ৩০ থেকে ৫০ ভাগ) এজন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।
অন্যান্য শিশুর মত প্রতিবন্ধীদেরও বিভিন্ন শারীরিক অসুখ হতে পারে। কিন্তু স্বাভাবিক শিশুর মত এরা রোগের কথা বলতে পারে না। তাই এদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের সম্ভাবনা ঃ
বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এদের বিদ্যমান বুদ্ধির সর্বোত্তম ব্যবহার সম্ভব এবং এদেরকে উপার্জনক্ষম করা সম্ভব।
এদেরকে পরিবারের বোঝা হিসাবে দেখা হয়। কিন্তু উপযুক্ত চিকিৎসা ও প্রশিক্ষনের সাহায্যে এদের অনেককেই মোটামুটি স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা সম্ভব।
স্বাস্থ্যগত যোগ্যতা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ সাপেক্ষে এরা দাম্পত্য জীবন যাপন করতে পারে এবং সুস্থ স্বাভাবিক সন্তান জন্ম দিতে পারে।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের জন্য চিকিৎসকের করনীয় ঃ
শিশু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিনা সঠিকভাবে নিরূপন করা।
প্রতিবন্ধিতার সাথে উপস্থিত অন্যান্য বুদ্ধি রোগ যেমন জেদ, অতি চাঞ্চল্য, আক্রমনাত্মক আচরন, আবেগের সমস্যা, মৃগী রোগ ইত্যাদির চিকিৎসা প্রদান করা।
শারীরিক অসুস্থতা থাকলে চিকিৎসা প্রদান করা।
প্রতিবন্ধী শিশুর পিতামাতা বা অবিভাবককে কাউন্সেলিং বা পরামর্শ দেয়া
পিতামাতাকে অনুভূতি, চিন্তা, ও আচরন বিষয়ক পরামর্শ প্রদান
পিতামাতার দুঃচিন্তা নিরাময়ের জন্য পরামর্শ প্রদান
প্রতিবন্ধী শিশুর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষন ও পূনর্বাসন বিষয়ক পরামর্শদান
প্রতিবন্ধী শিশুর আচরনগত সমস্যার বিষয়ে পরামর্শ দান
বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের জন্য আর কী করা প্রয়োজন ঃ
ফিজিওথেরাপী
শারীরিক সমস্যার জন্য ফিজিওথেরাপী প্রদান
শারীরিক সমস্যার উন্নয়নের জন্য পিতামাতাকে নির্দেশনা দান
স্পীচ থেরাপী
কথা ও ভাষাগত সমস্যার জন্য স্পীচ থেরাপী প্রদান
কথা ও ভাষার উন্নতির জন্য পিতামাতাদের নির্দেশনা দান
বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষন এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী শিশুর বিদ্যমান বুদ্ধির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। এতে করে প্রতিবন্ধী শিশুটি পরবর্তীতে স্বনির্ভর জীবন যাপন করতে পারে। এজন্য এদেরকে যত কম বয়স থেকে সম্ভব বিশেষ স্কুল, সাধারণ স্কুল কিংবা বাড়িতেই বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
শিক্ষাদানের বিষয়সমুহঃ
আত্মপরিচর্যামূলক দক্ষতা- হাঁটতে, বসতে, দাঁড়াতে শেখানো; কাপড় পরতে ও খুলতে শেখানো, ঠিকমত পেশাব পায়খানা করতে ও পরিস্কার করতে শেখানো।
জ্ঞানগত দক্ষতা-কথা বলা ও বুঝতে শেখানো, কিছু লেখাপড়া, গণনা করা, ঘটনা বুঝতে পারা শেখানো।
আত্মরক্ষামূলক দক্ষতা- আগুন/পানি সহ অপ্রীতিকর পরিস্থিতি থেকে নিজেকে রক্ষা করার কৌশল শেখানো।
বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষন-যেমন বিভিন্ন হাতের কাজ, গৃহস্থলী কাজ, কুটির শিল্পের কাজ ইত্যাদি শেখানো যেতে পারে।
অন্যান্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা- যেমন অন্যের সাথে মেলামেশা, ভদ্র আচরন করা, খেলাধুলা, ধর্মীয় শিক্ষা ইত্যাদি।
পিতামাতা/অভিভাবকের করনীয়
বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা সারিয়ে তোলার কোন যাদুকরী চিকিৎসা নেই। এরূপ কোন পরামর্শে বিভ্রান্ত হবেন না। তবে নিজেদেরকে অসহায় ভাববেন না এবং এর জন্য নিজেদেরকে অপরাধীও ভাববেন না। আপনাদের শ্রম ও যত্ন, বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষন, আর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও সহায়ক দলের পরামর্শ আপনার প্রতিবন্ধী শিশুর বিদ্যমান স্বল্পবুদ্ধির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবে-এদের যোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে, পরিবারের বোঝা না হয়ে বরং এরা বিভিন্ন মাত্রার স্বনির্ভর জীবন যাপনে সক্ষম হবে। তাই আপনারা
এদের প্রতি অধিকতর যত্নশীল হোন।
এদেরকে মানসিক নির্যাতন করবেন না অথবা অহেতুক চাপ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকুন।
এদের আবেগ, অনুভূতির যথাযথ মূল্যায়ন করুন।
এদের পুষ্টি, খেলাধুলা, বিনোদন, পারিপার্শ্বিক পরিবেশগত সকল অধিকার নিশ্চিত করুন।
এদেরকে সঠিকভাবে লালন-পালন, বুদ্ধির সর্বোত্তম ব্যবহার ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কোন মানসিক/শারীরিক সমস্যার জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করুন।
এদের বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করুন। যদি সম্ভব না হয় তবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতেই শিশুটির প্রশিক্ষন দিন এবং যতদুর সম্ভব এর দক্ষতা বৃদ্ধি করুন এবং স্বনির্ভর করে গড়ে তুলুন।
এদেরকে বাড়িতে শেখানোর জন্য সাধারন কিছু নিয়ম
শেখানোর জন্য এমন বিষয় বাছাই করবেন এবং এমনভাবে চেষ্টা করবেন যাতে শিশু সেটি করতে সক্ষম বা সফল হয়।
শুরুতে সহজ ও ছোট কাজ দিয়ে শুরু করুন (যেমন হাঁটতে, বসতে, দাঁড়াতে, কাপড় পরতে খুলতে, দাঁত মাজতে শেখান)।
একই সাথে একাধিক বিষয় শেখাবেন না।
শেখানোর সময় তাকে মৌখিক ভাবে এবং সমর্থনসূচক আচরনের মাধ্যমে উৎসাহ দিন।
শিশু কাজটি করতে বা শিখতে পারলে তাকে পুরস্কার দিন। এরকম পুরস্কার আদর করা, প্রশংসা করা, বেড়াতে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি থেকে চাহিদা মাফিক যেকোন জিনিস হতে পারে।
শেখানোর সময় শিশুর আগ্রহ, ইচ্ছা ও পছন্দকে গুরুত্ব দিন। ইতিবাচক মনোভাব দেখান। শিশুর ব্যর্থতার জন্য ধৈর্য্য হারাবেন না। মারধর, বকাঝকা, ভয় দেখানো, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবেন না। এদের জন্য স্নেহমমতাময় ঘরের পরিবেশ গড়ে তুলুন। তাকে সকল ধরনের সমর্থন যোগান এবং অন্যের বিরূপ সমালোচনা ও আচরন থেকে শিশুকে রক্ষা করুন।
রেকর্ড সংরক্ষন
প্রশিক্ষনের ক্ষেত্রে শিশুর অগ্রগতি, আচরনগ ও আবেগ জনিত সমস্যার বিষয়ে একটি ডায়েরিতে সাপ্তাহিকভাবে লিখে রাখুন। নিজেরা এই রেকর্ড পড়ুন , বিশ্লেষন করুন ও সেভাবে কর্মকৌশল নির্ধারন করুন।
প্রতিবার সাক্ষাতের সময় এই রেকর্ডের ডায়েরি সংগে আনুন যা চিকিৎসককে ও সংশ্লিষ্ট সকলেরই শিশুকে বুঝতে ও পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারন করতে সাহায্য করবে।

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুদের বিশেষ প্রশিক্ষনের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ঃ
১. বাংলাদেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সমিতি পরিচালিত বিশেষ স্কুল-৪-এ ইস্কাটন গার্ডেন, রমনা, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ ফোন ঃ ৯৩৩৪০০৯, ৯৩৫৬৫৯২ (দেশব্যাপী এদের অনেক শাখা আছে)
২. বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন পরিচালিত শিশু বিকাশ ক্লিনিক ও বিশেষ স্কুল
প্রধান কার্যালয়- ১২ নিউ সার্কুলার রোড, পশ্চিম মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭ (সিদ্ধেশ্বরী জামে মসজিদের উল্টো দিকের গলিতে) ফোন ঃ ৯৩৫১৬২৫, ৯৩৩৫৯৮৭
শাখা কার্যালয়-মিরপুর-২, রোড-৬, সেকশন-২, মিরপুর হাউজিং এষ্টেট, ঢাকা-১২১০ (মিরপুর পোষ্ট অফিসের পিছনে ও শিশু হাসপাতালের সামনে) ফোন ঃ ৮০২৩৬৯০
৩. বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ও জাতীয় বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্র-মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৫
এছাড়া আরও অনেক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের শিশুদের সেবা দিয়ে থাকে। এদের সহায়তা নিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!